ফিলিস্তিনকে পূর্ণ সদস্য হিসেবে স্বীকৃতি দিতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সাধারণ পরিষদ। স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার (১০ মে) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে সংস্থার সদরদপ্তরে এক ভোটাভুটির মাধ্যমে প্রস্তাবটি পাস হয়।
২০১২ সাল থেকে জাতিসংঘে পর্যবেক্ষক রাষ্ট্রের মর্যাদা পেয়ে আসছে ফিলিস্তিন। পূর্ণ সদস্যপদ শুধু জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে গৃহীত হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো দেয়ার ক্ষমতাবলে তা আটকে যেতে পারে।
সাধারণ পরিষদে এ প্রস্তাবের পক্ষে ১৪৩টি দেশ ভোট দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলসহ নয়টি দেশ ছিল বিপক্ষে। ভোটদানে বিরত ছিল ২৫টি দেশ। এ প্রস্তাব ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্যপদ না দিলেও যোগদানের যোগ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন। অন্যদিকে জাতিসংঘে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদান বলেছেন, সংস্থাটি একটি ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’কে স্বাগত জানিয়েছে।
সবশেষ এপ্রিল মাসে ১৫ সদস্যের জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ফিলিস্তিনের সদস্যপদ দেয়ার প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। এরপরই সেই আবেদন নবায়ন করে পুনরায় জমা দেয় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। সেই প্রস্তাবেই ভোট হলো শুক্রবার।
জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য হওয়ার জন্য একটি আবেদন প্রথমে নিরাপত্তা পরিষদ ও পরে সাধারণ পরিষদে অনুমোদিত হতে হয়। সাধারণ পরিষদ একা জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্যপদের অনুমোদন দিতে পারে না।
খসড়া প্রস্তাবটি পাস হওয়ায় সেপ্টেম্বর থেকে কিছু অতিরিক্ত অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবে ফিলিস্তিন। যেমন, সাধারণ পরিষদের অ্যাসেম্বলি হলে জাতিসংঘের অন্য সদস্যদের মতো একটি আসন পাবে তারা। তবে ভোট প্রয়োগের কোনো ক্ষমতা তাদের হাতে থাকবে না।
এমন এক সময় সাধারণ পরিষদের প্রস্তাবটি পাস হলো যখন বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।
ইইউ পররাষ্ট্র নীতির প্রধান জোসেপ বোরেল সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমকে জানান, স্পেন ২১ মে এ বিষয়ে ঘোষণা দেবে। আয়ারল্যান্ড, স্লোভেনিয়া ও মাল্টাও শিগগিরই একই পদক্ষেপ নেবে।
১৯৮৮ সালে প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও) প্রথমবার ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়। বাস্তবে ইসরায়েল-অধিকৃত পশ্চিম তীরের কিছু অংশে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) মাধ্যমে স্ব-শাসন সীমিত রয়েছে। ২০০৭ সালে হামাসের কাছে গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ হারায় পিএ।
জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ১৩৯টি ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছে।তথ্যসূত্র:বনিকবার্তা