logo
   প্রচ্ছদ  -   শিক্ষাঙ্গন

উদ্ভূত সংকটে জাতীয় ঐক্য ও সংলাপ জরুরি: ঢাবি নীল দল
Posted on Aug 04, 2024 10:58:16 AM.

উদ্ভূত সংকটে জাতীয় ঐক্য ও সংলাপ জরুরি: ঢাবি নীল দল

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত সংকটে জাতীয় ঐক্য ও সংলাপ জরুরি বলে মনে করে আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীল দল। 

কোটা সংস্কার আন্দোলনে সব হত্যা, শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের ওপর হামলা, নাশকতা ও ধ্বংসযজ্ঞের বিচারের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে শিক্ষকদের পক্ষে এ কথা বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান।

শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে নীল দল আয়োজিত মানববন্ধনে অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, এই মুহূর্তে যেটি প্রয়োজন এবং আমি দাবি রাখি, সেটি হলো একটি জাতীয় ঐক্যের। সেটির জন্য সংলাপের বিকল্প নাই। 

তিনি বলেন, জাতীয় সংকট উত্তরণের জন্য জাতীয় সংলাপ জরুরি। সেজন্য সরকারের উচ্চমহল থেকে এই উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। কেননা, এ জাতি যে উচ্চতায় উপনীত হয়েছে, সেখান থেকে আমরা পশ্চাতে যেতে পারি না। এখন যে সংকট তৈরি হয়েছে, এটা জাতীয় সংকট। এটা একাডেমিক কোনো সংকট নয়। এই জাতীয় সংকট তৈরি হয়েছে পলিটিক্যাল স্থবিরতার কারণে। জাতীয় সংকট জাতীয়ভাবেই সমাধান করা প্রয়োজন।

শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানিয়ে সাবেক উপাচার্য বলেন, তারা কিন্তু জাতিকে আরেকটি শিক্ষা দিল এবং তারা ইতিহাসের একটি অংশ হলো। ন্যায্যতা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কীভাবে নিয়মতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন-সংগ্রাম পরিচালনা করতে হয়, সেটি বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনায় শিক্ষার্থীরা যেভাবে প্রমাণ করেছিল, তার পুনরাবৃত্তি ঘটল ১ জুলাই থেকে।

দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, আমরা ছাত্রশূন্য ক্যাম্পাস দেখতে চাই না। আমরা চাই অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হোক। যাতে শিক্ষার্থীরা নিজ ক্যাম্পাসে এসে জীবন গড়ার সুযোগ পায়, সেই কাজটি আমাদের অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত।

মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, আমরা সবসময় কোটার যৌক্তিক সমাধান চেয়েছি। তবে তৃতীয় পক্ষ শিক্ষার্থীদের বিপথে পরিচালনা করে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন নীল দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এম আমজাদ আলী, ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জিনাত হুদা, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক অহিদুজ্জামান, সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক ড. গোলাম রাব্বানী।

মানববন্ধন শেষে শিক্ষকরা মিছিল নিয়ে রাজু ভাস্কর্য ঘুরে ৫ দফা দাবিতে উপাচার্য কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি দেন। এর আগে মানববন্ধনে স্মারকলিপি পড়ে শোনান নীল দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক মোহাম্মদ আমজাদ আলী। 

স্মারকলিপিতে ৫ দফা দাবি জানায় নীল দল। সেগুলো হলো- ১. কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে ক্যাম্পাসে সংঘটিত সব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে দোষীদের অবিলম্বে শাস্তির ব্যবস্থা করা; ২. আবাসিক হলগুলোতে বৈধ এবং নিয়মিত শিক্ষার্থীদের অবস্থান নিশ্চিত করতে নীতিমালা প্রণয়ন করা; ৩. আবাসিক হলগুলোতে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ, শিক্ষার্থীদের জীবনমানের উন্নয়ন, স্বাধীন মতপ্রকাশ এবং যে কোনো ধরনের নির্যাতন-নিপীড়ন রোধে নীতিমালা প্রণয়ন করা; ৪. গ্রন্থাগারগুলোতে শুধু বৈধ শিক্ষার্থীদের প্রবেশ নিশ্চিতকরণে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা; ৫. বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

হামলা প্রতিরোধে প্রশাসনের ঘাটতি ছিল না : নীল দলের পক্ষ থেকে দেওয়া স্মারকলিপির বিষয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন উপাচার্য অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামাল। তিনি জানান, ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা প্রতিরোধে প্রশাসনের চেষ্টার কোনো ঘাটতি ছিল না।

শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভা শেষে তিনি বলেন, নীল দলের পক্ষ থেকে যেই দাবি উত্থাপন করা হয়েছে, সিন্ডিকেট সভায় আমরা ইতোমধ্যে আলোচনা করেছি। জাতীয় আন্তর্জাতিকভাবে তদন্তের মাধ্যমে সব হত্যাকাণ্ডের বিচার যেন হয় সে বিষয়ে সভায় কথা হয়েছে। আবাসিক হলে শিক্ষার্থীরা যাতে উঠতে পারে সে বিষয়ে নীতিমালা দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোকে সংস্কারের চেষ্টা করছি। ভবিষ্যতে জোর করে রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করানো থেকে শুরু করে গণরুমের সংস্কৃতি বাদ দেওয়ার জন্য আমরা কাজ করছি।

শহীদুল্লাহ হলে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিষয়ে উপাচার্য বলেন, এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কোনো গাফিলতি ছিল না। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আট সপ্তাহের মধ্যে সরকারের কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।